কিভাবে কাটছে শিক্ষার্থীদের করোনার দিনগুলো?

করোনার ভয়াল গ্রাসে স্থবির হয়ে আছে পৃথিবী। বাংলাদেশের পরিস্থিতিও দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। আর এমন পরিস্থিতিতে যাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস গু‌লো তারাও এখন ঘরের ভিতরে বন্দী জীবনযাপন করছে। করোনার এই ভয়াবহ অবস্থায় কিভাবে সময় কাটাচ্ছেন পাবলিক  বিশ্ববিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীরা? করোনা নিয়ে তাদের বর্তমান অনুভূতি গুলোও কি? তাদের উত্তর তুলে ধরা হয়েছে পাঠকদের উদ্দেশ্য।

আজকে ৩৬তম কোয়ারেন্টাইন। করোনা ভাইরাসের মহামারী থেকে বাঁচতে আমাদের সকলকে লকডাউনে থাকতে হচ্ছে! শব্দটার সাথেও আমার পরিচয় ৩৬ দিন ধরেই। দেশে আর্থিক সংকট দেখা দিচ্ছে, জিডিপি কমে যাচ্ছে, খাদ্য সংকট,  করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তবে পৃথিবীটা হচ্ছে পরিশুদ্ধ, দেখা দিচ্ছে এক অন্য রকম সৌন্দর্য! যে সৌন্দর্যে দেখা যাচ্ছে বঙ্গোপসাগরে ডলফিন, নতুন লাল কাকড়া, সামুদ্রিক লতা,  অতিথি বহু পাখি, ভোরে দেখা মিলছে শিষ দেয়া দোয়েল পাখির।

প্রকৃতি যেন আমাদের বদ্ধ করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিচ্ছে। তবে নিজেকে সাফল্যতার অর্জনের জন্য গড়ে তুলতে এই এক বিশাল অফুরন্ত সময়। আমি আমার কোয়ারেন্টাইন সময়গুলো খেয়ে ঘুমিয়ে শুক্রবার গুনে পাড়ি দেয়ার মধ্যে নেই। অনলাইনের মাধ্যমে আমরা পছন্দ মত শিক্ষনীয় কোর্সগুলো করতে পারছি এখন।

পাশাপাশি চেষ্টা করছি নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে থেকে অসচ্ছল মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াতে। গল্পের বই পড়ছি, অনলাইনে Discord এ  ডিবেট এ অংশগ্রহণও করছি। এই সময়কে নিজের জন্য কাজে লাগানো প্রয়োজন আমাদের সকলের। নিজের সময়কে শক্তি হিসেবে কাজে লাগাতে হবে, যেন অপর্যাপ্ত সময়গুলো সাফল্য ও শক্তিতে পরিণত হয়।

নাজনীন নাহার মজুমদার, ইসলামিক স্টাডিজ ডিপার্টমেন্ট, দ্বিতীয় বর্ষ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।


করোনার এই মৃত্যুমুখী চোখ রাঙানোর সময়ে প্রত্যেক সচেতন মানুষের মতো আমারও কিছুটা শঙ্কামিশ্রিত দিন কাটছে। যুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষরা যেমন গৃহকোণে লুকিয়ে থাকে, তেমনি করোনার সাথে মুখোমুখি না হতে আমাকেও গৃহবন্দী থাকতে হচ্ছে। ঘরে থেকে ঘুমানোর সময় পাচ্ছি অনেক, ঘুমাচ্ছিও বেশ তৃপ্তি করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় দিচ্ছি, বন্ধুদের খোঁজ-খবর নিচ্ছি। তাছাড়া কিছু সময় আল মাহমুদ, শক্তি চট্টোপাধ্যায়সহ কয়েকজন কবির কবিতা পড়ছি, ইতিহাসভিত্তিক বই পড়ছি টুকটাক। কবিতার আইডিয়া আসলে মাঝেমধ্যে কবিতা লিখছি।

করোনার সংক্রমণ যেভাবে বাড়ছে সেটা আমাদেরকে ইতালি-আমেরিকার দিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। এটা কমিয়ে আনতে এখন থেকেই বেশিসংখ্যক টেস্ট করানোর মাধ্যমে আক্রান্তদের দ্রুত আলাদা করা এবং প্রয়োজনীয় খাবারের যোগান দিয়ে অন্যদেরকে ঘরে রাখার পলিসি নেয়া উচিৎ। পৃথিবীর সকল মানুষের সুস্হ আয়ু প্রার্থনা করছি।

মো : আরিফ ইসতিয়াক, দ্বিতীয় বর্ষ, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

Leave a Comment